উমাপদ কর

ডোবা-ভাসা জলপিপি





আঠা সাঁটানো পোস্টার দেয়াল থেকে কপালে
        না-মোড়া পান অনেকগুলো সাজানো শ্বেত পাথরে
    কেউ কাউকে দেখছে না, কিন্তু ভয়ে আছে চলমান আঙুল
              কখন আউল-বাউল বাতাস উড়িয়ে দেয়
        বেড়াতে যাওয়া হাওয়া কখন যে ফিরে আসে!

ভেতরেও তাই, ‘চাই না, চাই না’ পোস্টার রিব্‌সে;
         না-অন্ধকার না-আলোয় সাজানো গানের কলি বাথরুম-ভুরভুর
     কেউ কাউকে চেনে না, তোয়াজ দূর ঠাঁই
              কখন তুঘলকি স্বপ্ন স্রোতে ভেসে যায়
                 কখনই বা ঘুমভাঙা লম্বা হাই মাস্তুল হয়ে যায়




জলের ওপর জল পাশে জল; দাঁড়ালে পায়ের ওপর মানুষ
     একদল মিলেমিশে একাকার, আরেকজন আলাদা আলাদা
             তাকেও মিশিয়ে দেয় জল ওরফে রক্ত ওরফে শ্লেষ্মা
                         শিস দেয় ঠোঁট, মস্তিষ্ক অসিলেটিং…

পা-পোশের পাশে পোড়া সিগারেট, ধরাতে পারতো আগুন
          এক্সিলেটর বন্ধ ইস্পাত শুধু, নামা ওঠা স্থগিত
                 চাওয়া না-চাওয়াকে ফেলে দিতে হয় ডাস্টবিনে
                         মেট্রোকে যে-কোনও প্রশ্নই পাতাল মাতালের…

এইসব টুকরো জানাশোনা, মোটেও কবিতা নয়…
                  কবিতার মতো নয়…
                       মোটেও ওই আরকি…


১০

একটি মাত্র পাতায় জীবনটা আঁটে না
        একবিন্দুও অধিকন্তু
           চেষ্টা সচেষ্ট তবু, নাভিশ্বাস

জলজীবনটা অস্থির ক্যালেন্ডারে একটা নির্দিষ্ট তারিখের সন্ধানে
         লাল, নীল তারিখের ঠিক ওপরেই বিবেকানন্দীয় গাম্ভীর্য
               চলতে থাকা টলমল থেকে পতন পর্যন্ত হাসিমুখের বাচ্চারা

স্থাবর কিছুটা পতাকা নাড়ায়, জঙ্গম জমতে গিয়ে বাষ্প
         দলিলের কালি-স্বাক্ষর লেপটে বাটিক,
               ব্যাংক-খাতার ছেঁড়া পাতারা সব উড়ো প্রজাপতি

ঘরটা রঙে আঁকা, বিছানা পেন্সিল-স্কেচের,
         লোটার জলে ডেঙ্গু-মশার লার্ভা
                বইয়ের র‍্যাকে এক-আধটা প্রচ্ছদ মণিতে ফলিত
            না-দেখা শেষ পাতা অভিমানে চোখ-ভেজা

পোষা খরিশ বাস্তু থেকে ফণা তুলে ফ্রিজ,
           পেন-ড্রাইভে পাণ্ডুলিপির মিসিং মিসিং খেলা
                  আরেকটা পাতা জন্ম নিতে গিয়ে ঢোক গিলে ফেলছে…

পাতার ওপর কি আমি! না দু-হাতে পাতাটা আমিই ধরে আছি
                ধরে আছে আমার দুধ, ভাত-ডাল, প্রাত্যহিকী
                          হয়তো সেখানে বড্ড মিস করছি নিজেকে


পাঠকের মতামতঃ